প্রকাশিত: ১১/১২/২০১৭ ৮:২২ এএম , আপডেট: ১৭/০৮/২০১৮ ৯:৪৯ এএম

উখিয়া নিউজ ডেস্ক::
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের জন্য রয়েছে শত শত ফ্রি চেয়ার। কিন্তু পর্যটকেরা জানেনা এই ফ্রি চেয়ারের কথা। হাইকোর্টের নির্দেশে বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির দেয়া এইসব ফ্রি চেয়ারে বসা পর্যটকদের কাছ থেকে টাকা আদায় করছে একটি চক্র। এতে প্রতারিত হচ্ছে পর্যটকেরা। উপেক্ষিত হচ্ছে হাইকোর্টের নির্দেশনা। অথচ গত বছর হাইকোর্টের নির্দেশে কক্সবাজার বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটি সমুদ্র সৈকতের পর্যটকের জন্য অর্ধেক চেয়ারে নীল রং দিয়ে ফ্রিতে বসার ব্যাবস্থা করে। এর পরথেকে সেই চেয়ারের আর কেউ খোঁজ রাখেনি। সমুদ্র সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে ফ্রি চেয়ারের প্রচারনা নিয়ে দেয়া সব বিলবোর্ড রাতের আধারে সরিয়ে ফেলে অসাধু ব্যাবসায়ীরা। এর পর থেকে ফ্রি চেয়ার থেকেও ঘন্টাপ্রতি ৩০ টাকা করে আদায় করে আসছে। কক্সবাজার বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির অবহেলা, প্রচারনা ও নজরদারির অভাবে গত ১ বছর ধরে পর্যটকদের সাথে প্রতরনা করে আসছে চক্রটি।
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের জন্য যে চেয়ার রয়েছে তার অর্ধেক ফ্রি করার নির্দেশনা দেয় উচ্চ আদালত। সমদ্র সৈকতে চেয়ার থেকে পর্যটকদের কাছে বাড়তি টাকা আদায় বন্ধে ও পর্যটকদের সুবিধার্থে ২০১৬ সালের ৩০ নভেম্বর হাইকোর্ট এই নির্দেশনা দেয়। হাইকোর্টের ওই নির্দেশনার পর কক্সবাজার বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটি সৈকতের অর্ধেক চেয়ার নীল রং লাগিয়ে দেয়। ওই সময় সমুদ্র সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে পর্যটকদের অবহিত করার জন্য বিভিন্ন প্রচারনামূলক বিলনবোর্ড টানিয়ে দেয়। কিন্তু ওই রাতের আধারে ওইসব বিল বোর্ড তুলে ফেলে সৈকতের অসাধু কিটকট ব্যাবসায়ীরা। আর সৈকতের ফ্রি চেয়ারগুলো ব্যাবসায়ীরা রক্ষনা বেক্ষন করার সিদ্ধান্ত হলেও তা ফেলে রাখা হয়েছে অযতœ আর অবহেলায়।
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের কলাতলি পয়েন্টের গিয়ে দেখাযায়, ব্যাবসায়ীরা সরকারী ফ্রি চেয়ার গুলোতে উপরের দিকে তুলে রেখেছে। অধিকাংশ ফ্রি চেয়ার নিজেদের চেয়ারের সাথে লাগিয়ে পর্যটকদের কাছ থেকে ঘন্টাপ্রতি ৩০ টাকা করে আদায় করছে।
খুলনা থেকে আসা আবদুর হামিদ নামের এক দম্পতি পাশাপাশি রাখা ২টি ফ্রি চেয়ারে বসেন। তাদের কাছ থেকে ২ ঘন্টায় ১২০ টাকা আদায় করে আবদুল মান্নান নামের চেয়ার মালিকের কর্মচারী আবদুর রশিদ।
পর্যটক আবদুল হামিদ জানান, সৈকতে সরকারের পক্ষ থেকে ফ্রি চেয়ারে বসার কোন তথ্য তারা জানেনা। সৈকত জুড়ে কোথাও এই তথ্য দেয়া নেই। সরকারের এই ভালো উদ্যোগের কথা জানলে তাদের জন্য সুবিধা হতো।
রাজশাহী থেকে বেড়াতে আসা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ শিক্ষার্থী আরিফ, ফয়সাল, রাশেদ ও মিনার বলেন, বীচে নীল ও সাদা রং এ দুই ধরনের চেয়ার রয়েছে। তবে এইখানে যে নীল রংএর চেয়ার ফ্রি তা আমরা জানতামনা। জানলে কখনো ফ্রি চেয়ারে টাকা দিয়ে বসতামনা।
কলাতলি সমুদ্র সৈকতের হোটেল সী-ক্রাউনের সামনে গিয়ে দেখা যায় সৈকতে আলমগীর নামের এক চেয়ার ব্যাবসায়ী একটি মরা কুকুর সরকারী ফ্রি নীর রং এর চেয়ারেরর নিচে লুকিয়ে রেখেছে। মরা কুকুরের দুর্গন্ধে ঐ এলাকায় পর্যটকরা যেতে পারছেনা। পরে ট্যুরিস্ট পুলিশ এসে ওই মরা কুকুরটি সরিয়ে পুতে ফেলার ব্যবস্থা করে।
প্রচারনা না থাকায় কক্সবাজারে বেড়াতে আসা পর্যটকেরা সৈকতের ফ্রি চেয়ারের ব্যাপারে কিছুই জানেনা। ফলে সরকার নির্ধারিত ফ্রি চেয়ার বসা পর্যটকদের কাছথেকেও টাকা আদায় করছে।
সমুদ্র সৈকতের দায়িত্ব প্রাপ্ত কক্সবাজার জেলা প্রসাশকের নির্বাহী মাজিস্ট্রেট সাইফুল ইসলাম জয় জানিয়েছেন, বীচে ফ্রি চেয়ার নিয়ে কিছু অস্বাধু ব্যাবসায়ী পর্যটককের সাথে প্রতারনা করার খবর পেয়েছি। কয়েকদিনের মধ্যেই ওই অস্বাধু ব্যাবসায়ীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। ফ্রি চেয়ারেরর প্রচারনা নিয়ে নতুন করে সৈকতে প্রচারপত্র বিলা করা হবে বলে জানান তিনি।
কক্সবাজার ট্যুরিস্ট পুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার রায়হান কাজেমী জানিয়েছেন, পর্যটকদের সাথে প্রতরনার দায়ে কিছু চেয়ার ব্যবসায়ীকে সতর্ক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মোবাইলকোর্ট করার প্রস্তুতি চলছে।

পাঠকের মতামত

নিম্নচাপের প্রভাব: কক্সবাজার সৈকতে ভাঙন, লোকালয়ে জোয়ারের পানি

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে জোয়ারের পানি ঢুকে কক্সবাজারের কুতুবদিয়া, মহেশখালী ও সেন্টমার্টিন দ্বীপের কিছু এলাকা ...

সেন্টমার্টিনে খাদ্য সংকট, লোকালয়ে ঢুকছে জোয়ারের পানি

তিনদিন ধরে টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে সবধরণের নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। ফলে সেন্টমার্টিন দ্বীপে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের তীব্র ...